Thursday 23 July 2015

কেন্দ্রবিমুখ - রহমান হেনরীর কবিতা ১

গারো তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে গণধর্ষণের ভেতর দিয়ে রাজধানী চেনানো,
স্ত্রীকে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা, সমুদ্র উৎসব আর বইমেলা...
এসবের ভেতর থেকে লাফিয়ে বেরুচ্ছে সদর্ভে নিজের পরিচয় দেয়া খুনী,
 সিংহপুরুষের মতো হেঁটে বেড়াচ্ছে।

Tuesday 16 June 2015

সাধনপুরের সাধু- পিশাচ কাহিনী - জিয়া চৌধুরী

চর সাধনপুর গ্রাম। গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হয়েছে বিশাল এক মাঠ। মাঠের মাঝামাঝিতেই পুকুরটি। পুকুরের পূর্ব পাশে যে বিরাট বট গাছটা রয়েছে, তার তলায় আস্তানা গেড়েছে এক সাধু বাবা। ইয়া লম্বা লম্বা চুল আর দাড়ি গোফের জঙ্গল। হাত পায়ের নখগুলো বড় বড়। পরনে গেরুয়া বসন, উর্ধাঙ্গ খালি। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। একটা বাঘের চামড়ার উপর বসে থাকে। একপাশে খাড়া করে রাখা একটা ত্রিশুল। আর একটা লোটায় বিভিন্ন গাছের পাতা ও ফুল রাখা। দেখলেই ভক্তি জন্মে সাধু বাবার উপর। গ্রামের লোকজন খুব খুশি। এমন একজন মানুষ তাদের গ্রামে হাজির হয়েছে। গ্রামের লোকজন প্রতিদিন সকালে সাধুবাবার নিকট বিভিন্ন ফলমুল খাদ্যদ্রব্য নিয়ে হাজির হন। সাধুবাবা সবসময় চোখ বুজে থাকেন। কারো সাথে কথা বলেননা। সবগুলো জিনিষ যেভাবেই দেয়া হয় সেভাবেই পড়ে থাকে। পরে লোকেরা তা সরিয়ে নেয়। এভাবে কেটে গেল কয়েকটা দিন। 

গ্রামের উত্তর প্রান্তে রফিক মিয়ার বাড়ি। তার দুধেল গাইটি সন্ধ্যা থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা। সারা গ্রাম আঁতিপাতি করে খোঁজ করেও পাওয়া গেলনা গরুটি। তারপর হাল ছেড়ে দিয়ে রফিক মিয়ে ভাবতে লাগলো কোথায় গেল গরুটি। পরদিন গোয়াল ঘরের পেছনেই পাওয়া যায় গরুটিকে। মৃত। বিভৎস। কিসে জানি পুরো মাথাটা ধড় থেকে টেনে ছিড়ে ফেলেছে এমন অবস্থা। তারপর পেট ফেড়ে কলিজা বের করে ফেলেছে। গ্রামের ছেলেবুড়ো সকলে জড়ো হয়ে যায় সেখানে। এমন কাজ কার দ্বারা সম্ভব। এত বড় একটা গরুর মাথা টেনে ছিড়ে ফেলে এমন শক্তি কোন জন্তুর আছে? গ্রামের সবখানেই এনিয়ে আলোচনা চলছে? কেউ বলছে বড়সড় কোন বাঘের হামলা। কেউ বলছে বাঘ হওয়ার প্রশ্নই আসেনা। যেভাবে রাক্ষসের মত টেনে ছিড়ো ফেলেছে। কেউ বললো জ্বিনের কাজ। সবার মনেই এ নিয়ে জল্পনা কল্পনা ও আতংক ভর করেছে। পরদিন

Friday 13 March 2015

তোর জন্য

তোর জন্য, আস্ত আমি একা আছি
 হাত দিয়ে দেখ, তোর হৃদয়ের কাছাকাছি
 শীত তো গেল
 ফাগুন এল
এই ফাগুনে তোকে ছাড়া কেমনে বাঁচি। 
আসবিনা তুই?
তোকে ছাড়াই কাটিয়ে দিলাম ত্রিশ ফাগুন
 মনের ভিতর
ধিকি ধিকি জ্বলছে এই দেখ, প্রেমের আগুন।
তোর জন্য মনের দুয়ার সদাই খোলা
আয় না চলে, চুপটি করে, আপন ভোলা।
 আর কতকাল থাকবি একা, থাকবো একা,
দুজন দুদিক?
এই ফাগুনে এক হৃদয়ে, মিশে যাবো
হবো একই পথের পথিক।

Sunday 14 July 2013

প্রিয়তা (বড় গল্প) লিখক: তৃষা

প্রিয়তার মেজাজটা খুব খারাপ। অকারনে খারাপ নয় পুরোপুরি যুক্তিসঙ্গত কারনে খারাপ। দুই সপ্তাহ পর তার নাচের কম্পিটিশনের ফাইনাল অথচ সে হাসপাতালে। কারন তার ডান পা টার ভেতরে কাঁচ ঢুকেছে। বড়সড় জাম্বু সাইজের কাঁচ। পায়ের রগ নাকি কেটে গেছে। ডাক্তার এক কথায় বলেছে নাচ আর হবে না অন্তত এক বছর। এর পরেও নাচতে পারবে কিনা জানেন না। তবে এটা জানেন এখন যদি নাচতে যায় পায়ের সেলাই কেটে যাবে। তখন আবার অপারেশন করতে হবে। অবস্থা আরো খারাপ হবে। অবশ্য নাচতে পারবে না প্রিয়তা। পা ই নড়াতে পারছে না নাচবে আর কি করে। আগের এপিসোডগুলো টেলিকাস্টের অপেক্ষায় আছে তবে এবার তো লাইভ। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না প্রিয়তা।
ঘটনাটা ঘটেছে গতকাল। প্রাকটিস করতে এসেছিল প্রিয়তা। ওকে এবার কেউ হারাতে পারবে না। ফাইনালের জন্য পেয়েছে কত্থক। সাথে একটু কনটেম প্রোরারি মিক্স করেছিল। ফাইনাল ওরা পাঁচজনে পাঁচ রকমের নাচ পেয়েছে। ভারতনাট্যম, কত্থক, সিনেমা, ওয়েসটার্ন আর বলিউড। এই নাচের কম্পিটিশনটা অন্য গুলোর মত নয়। বেশ ভাল মানের। জিততে পারলে পাবে ১৫ লাখ টাকা, একটা গাড়ি, শিক্ষাবৃত্তি, আরো নাচ শেখার জন্য স্কলারশীপ আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে এগ্রিমেন্ট। প্রিয়তা এবার জিতবে সবাই সে বিষয়ে নিশ্চিত। জাজেস মার্কস আজ পর্যন্ত ওর থেকে বেশী কেউ পায় নি আর ভোট ও সবসময় অনেক পাচ্ছে। তাছাড়া ফাইনালে ও আর ওর কোরিওগ্রাফার শফিক ভাই এমন কোরিওগ্রাফি করেছে কারো বাপের সাধ্য নেই জেতার। নাচটাকে টেকনিকালি আর ইমোশোনালি দ্যা বেস্ট করে ফেলেছে। ওর নাচ দেখে কড়াকড়ি কোরিগ্রাফার শফিক ভাইও কেঁদে দিয়েছেন। লোকটা প্রিয়তাকে খুব স্নেহ করেন। এই কম্পিটিশনে প্রিয়তার জন্যে যা করেছেন শফিক ভাই তা সত্যিই অকল্পনীয়।
অথচ সবার আশা ভেঙে প্রিয়তা এখন হাসপাতালের বেডে। ওর কেন যেন মনে হচ্ছে ওর পায়ে এই গাবদা সাইজের কাঁচ ঢোকাটা দূর্ঘটনা নয়। একটা প্রোফেশনার কম্পিটিশনের প্রাকটিস রুমে আলো থাকবে না আর ও একটু এগুতেই এই সাইজের কাঁচ ওর পায়ে ঢোকার জন্যে অপেক্ষা করবে এরকমটা হয় না। প্রিয়তা ঘরে আলো নেই বলে শফিক ভাইকে ফোন করে ওর চেয়ারের সামনে জিনিসপত্র রাখতে গেছে তখনি টের পেল পায়ে কিছু ঢুকেছে। অথচ ব্যাথা পেল না। চেয়ারেই বসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।

Tuesday 2 July 2013

কৃষ্ণকলি- ছোট গল্প

 
মম বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ বর্ষের ছাত্রী। চুপচাপ শান্ত ধরনের মেয়ে। বন্ধুবান্ধব তেমন একটা নেই।সেটা অবশ্য তার নিজের দোষেই। কারন সে সবার সাথে ঠিকমত কথাই বলতে পারে না। বিশেষত সুন্দরীদের সাথে। মমর গায়ের রং কালো। কিন্তু অসুন্দর নয়। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছে মেয়েরা পরিবারের বোঝা বিশেষত কালো মেয়েরা। ছোটদের মাথায় একটা কিছু ঢুকে গেলে তার খোলশ ভেঙে বেরিয়ে আসাটা বেষ কষ্টের। মমও বেরুতে পারে নি। তার দাদী সারাটাদিনই তার মাকে বলতেন,"অ বৌ।মাইয়া তো কাইল্যা পয়দা হইছে। বিয়া শাদী কেমনে দিবা? এই মাইয়ারে বিয়া দিতে তোমগো ফতুর অইতে অইব এই বইলা রাখলাম। "বাড়িতে তার অন্য ভাইবোন অনেক আদর পেত কিন্তু মমর গায়ের রং কালো ছিল বিধায় তার সে সৌভাগ্য হয় নি। অন্য ভাইবোনেরাও তার সাথে মিশত না।

Tuesday 25 June 2013

তিমিরের জন্মদিন

 By Robin Ahsirt

তিমিরের মনটা আজ খুব খারাপ।আজ ওর জন্মদিন কিন্তু ওর জন্মদিনে আজ কোন অনুষ্ঠান হবে না।কারন ওর জ্বর।একটু আধটু না ১০৪।তিমিরের বয়স অনুযায়ী বুদ্ধিটা মানানসই না।বয়স তো আট বছর কিন্তু আঠারো বছর বয়সীদের থেকেও বেশী বুদ্ধি।অকালপক্ক নয় তবে হ্যাঁ বুদ্ধি ঠিকই আছে।

তিমির শুয়ে আছে তার বিছানায়।তার ঘরটা খুব্বই সুন্দর।পায়ের কাছে বারান্দা।বিশাল একটা কাঁচের দরজা।ওখান থেকে সুন্দর নীল আকাশ,পাখি সবই দেখতে পারে।পাখির কিচিরমিচির শুনতে খুব ভাল লাগে তিমিরের।সবচেয়ে ভাল লাগে বৃষ্টি।কি সুন্দর রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি হয়।ওদের ক্লাসে একটা মেয়ে আছে বৃষ্টি।বেজায় পাজি।বৃষ্টির মত স্নিগ্ধ না।এক্কেবারে সাইক্লোন ওয়ালা বৃষ্টি।খুব জ্বালায়।বড় হলে সে আর যাই হোক বৃষ্টির মত মেয়েকে বিয়ে করবে না।

Monday 24 June 2013

চেনা অচেনা

:দোস্ত।সত্যিই চলে যাবি?
:হ্যাঁ রে।কিছু করার নেই।বাবা বলে দিয়েছে,যাওয়া ছাড়া কোন গতি নেই।
:কেন যাবি?এখানে সবার অধিকার সমান।
:তুই মানছিস।ওরা তো মানছে না!
:পিসেমসাই ফিরবেন?
:বলেছেন তো আমাদের বর্ডারটা পার করে দিয়েই তিনি আর জ্যাঠা ট্রেনিং এ যাবেন।তারপর যুদ্ধে।
:গ্রামের বাকী হিন্দুরা তো এখনো কেউই যুদ্ধে যায় নি।পিসেমসাইয়ের যদি কিছু হয়?
:ধুরো পাগল।যুদ্ধে এতটুকু তো থাকবেই।কিন্তু দেখিস দেশ স্বাধীন হবে আর হলেই দৌড়ে ফিরে আসব আমরা।
:কিন্তু শুনেছি ঢাকায় নাকি সব উড়িয়ে দিয়েছে।আমাদের গ্রামটাও যদি উড়িয়ে দেয়।
:দিলে দেবে।দেশটাতো আমাদের।কোথাও না কোথাও ঠিকই জায়গা হয়ে যাবে।রাজাকারগুলো বড্ড ঝামেলা করছে।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেতে হবে রে।
:ওখানে যেতে কতদিন লাগবে?
:এমনিতে তো সময় লাগে রাস্তা চিনে চিনে যেতে।কিন্তু বাবার মুক্তিদের সাথে জানা পরিচয় আছে।তাড়াতাড়িই পৌছে দেবে।
:তুই মুক্তি দেখেছিস?
:হুম।অনেক।কেন তুই দেখিস নি?
:না তো।
:কেন?শফি ভাই,রাজু ভাই,আযাদ ভাই ওরা সব্বাই মুক্তি।
:কি বলছিস?
:সত্যি।
:আচ্ছা।তুই যুদ্ধে যাবি না?বাবা তো নিজেই খোলাসা করে কিছু বলছে না যাবে কি যাবে না।পিসেমসাই তো যাচ্ছেনই।
:জানি না রে।যেতে তো ইচ্ছে হয়।দেখি।বাবা যেতে না দিলে পালিয়ে যাব।
:সত্যি?তাহলে আমিও পালাব।আমাদের আবার দেখা হবে।
:হয়তো।
:আচ্ছা যদি আমাদের আর দেখা হবে না?
:হবে হবে।ঠিক হবে।এখন না হোক।বড় হই তোকে ঠিক খুঁজে বের করব।
:চিনবি কি করে?আমি বড় হলে তো স্টাইল করে দাড়ি রাখব।
:যত যাই করিস।ঠিক চিনব তোকে।